গাইবান্ধার রসমঞ্জুরী যাচ্ছে বিদেশেও

গুণে, মানে ও স্বাদে অন্যতম সেরা মিষ্টান্ন রসমঞ্জুরী। প্রায় শত বছর ধরে এ ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন গাইবান্ধার কারিগররা। রসমঞ্জুরীর জেলা নামেও পরিচিতি লাভ করেছে গাইবান্ধা। এখানকার তৈরি রসমঞ্জুরী এখন যাচ্ছে বিদেশেও। ইতোমধ্যে রসমঞ্জুরীকে গাইবান্ধা জেলার ব্র্যান্ডিং পণ্য ঘোষণা করা হয়েছে।

গাইবান্ধার রমেশ মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের মালিক কালীচরণ বলেছেন, ‘আদিকাল থেকেই মিষ্টান্নের প্রতি বাঙালির আলাদা টান আছে। স্বাদ ও গুণ-মানের কারণে গাইবান্ধার রসমঞ্জুরীর আছে আলাদা সুনাম।’

গাইবান্ধা পৌরসভার সাবেক মেয়র শাহ মাসুদ জাহাঙ্গীর কবির মিলন বলেছেন, ‘গাইবান্ধাতে বেড়াতে এসেছেন, কিন্তু রসমঞ্জুরীর স্বাদ নেননি, এমন লোক খুঁজে পাওয়া মুশকিল। বিভিন্ন অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে অফিস-আদালতে, অতিথি আপ্যায়নে রসমঞ্জুরীর বিকল্প নেই এ জেলায়।’

গাইবান্ধা মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের মালিক শামীম আহম্মেদ বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন অন্তত ৮ মণ রসমঞ্জুরী তৈরী করি। বিভিন্ন স্থান থেকে দুধের ছানা কিনে আনি। আগে হাতেই তৈরী হতো রসমঞ্জুরীর গুটি। স্বাস্থ্যসম্মত করার জন্য এখন মেশিনে গুটি তৈরী করে মেশিনের মাধ্যমেই দুধে মেশানো হয়।’

গাইবান্ধায় কয়েকটি প্রতিষ্ঠান রসমঞ্জুরী তৈরীতে বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেছে। এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য—গাইবান্ধা মিষ্টান্ন ভাণ্ডার, নারু বাবুর দোকান, রমেশ মিষ্টান্ন ভাণ্ডার প্রভৃতি। এসব প্রতিষ্ঠান স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহের পাশাপাশি বিদেশেও রপ্তানি করছে রসমঞ্জুরী।

রসমঞ্জুরী তৈরীর উপকরণ হলো গরুর খাঁটি দুধ, চিনি, দুধের ছানা ও ছোট এলাচ। গরুর দুধ জ্বাল দিয়ে ঘন ক্ষীর তৈরী করা হয়। তাতে মেশানো হয় পরিমাণমতো চিনি। ছানা দিয়ে তৈরী ছোট ছোট গোলাকার গুটি চিনির সিরকায় জ্বাল দিয়ে বাদামী রং হলে সেগুলো ক্ষীরে মেশানো হয়। গুটিগুলো ঘন ক্ষীরে মঞ্জুরিস্থ হয়ে দুটি ভিন্ন স্বাদের সমন্বয়ে সৃষ্টি করে তৃতীয় মাত্রার অপূর্ব স্বাদ। তাই, এ মিষ্টির নাম রসমঞ্জুরী।

গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক মো. অলিউর রহমান বলেছেন, ‘রসমঞ্জুরী রসালো ও সুস্বাদু মিষ্টান্ন। দেশীয় চাহিদা মিটিয়ে গাইবান্ধার রসমঞ্জুরী বিদেশেও রপ্তানি করা হচ্ছে। এটি আমাদের জেলার ব্র্যান্ডিং খাবার।’