বঙ্গ সম্মেলনে শাকিবের না যাওয়ার নেপথ্যের কারণ কী?

বহির্বিশ্বে বাংলা ভাষাভাষীদের সবচেয়ে বড় উৎসব বঙ্গ সম্মেলনের শুভেচ্ছাদূত হয়েছিলেন শাকিব খান।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লাস ভেগাসের গেল ২ জুলাই ৪২তম বঙ্গ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।কিন্তু সেখানে উপস্থিত হননি শাকিব খান।যা বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে।শুভেচ্ছাদূত হয়েও কেন যোগ দেননি শাকিব? সেই প্রশ্ন খুঁজতে গিয়ে জানা গেল টাকা পয়সার বনিবনাসহ বেশ কিছু বিষয়ে মতের অমিল দেখা দেয়।তাই আমেরিকায় থাকলেও বঙ্গ সম্মেলনে হাজির হননি তিনি। 


বঙ্গ সম্মেলনে হাজির না হওয়ার নেপথ্যের কারণ জানালেন ঢাকাই সিনেমার একজন প্রযোজক। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই প্রযোজক আমেরিকা স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। তিনি জনানা, শাকিব অনুষ্ঠানের দুই দিন আগে আয়োজকদের কাছে নিউইয়র্ক থেকে ঢাকা যাওয়ার বিমান টিকিট দাবী করে বসেন।আয়োজকদের দাবি, চুক্তিতে বিমান টিকিটের কোনো বিষয় কিংবা শর্ত ছিল না।কিন্তু ঢাকা ফেরার বিমান টিকিট না দেওয়াতে শাকিব বঙ্গ সম্মেলনে উপস্থিত হননি।বঙ্গ সম্মেলনে পূজাকে আমন্ত্রণ না করার কারণে আয়োজকদের সঙ্গে বিতন্ডায় জড়িয়েছিলেন শাকিব, এমন কথাও শোনা গেছে।
এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বঙ্গ সম্মেলনের আয়োজকদের একজন বলেন, ‘শাকিব খানের সঙ্গে আমাদের চুক্তি ছিল সম্মেলনের ব্রান্ড অ্যাম্বাসেডর হওয়া নিয়ে।নির্দিষ্ট দিনে তিনি সেখানে হাজির থাকবেন।এ জন্য তাকে তার দাবিকৃত পারিশ্রমিকও পরিশোধ করা হয়েছে।কিন্তু তিনি অনুষ্ঠানের দুই দিন আগে আমাদের কাছে নিউইয়র্ক টু ঢাকা বিমানের বিজনেস ক্লাস টিকিট দাবী করে বসলেন।আমরা এমনিতেই আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ ছিলাম।আয়োজনের খরচই সংগ্রহ করতে পারছিলাম না।তার মধ্যে তার (শাকিব খানের) অন্যায় আবদার রাখতে পারিনি।আর তার অনৈতিক চাওয়া অর্থাৎ বিমান টিকিট না দেওয়াতে তিনি চুক্তি ভঙ্গ করে আমাদের অনুষ্ঠানেও যাননি।এটা ছিল সম্পূর্ণ অন্যায়।যেখানে ভারতীয় অনেক তারকা ভারত থেকে আমেরিকায় এসে অংশ নিয়েছিলেন, আর শাকিব খান ব্রান্ড অ্যাম্বাসেডর হয়েও আমেরিকায় অবস্থান করা সত্ত্বেও অনুষ্ঠানে যোগ দেননি।’ 


এদিকে বঙ্গ সম্মেলনের আয়োজক কর্তৃপক্ষ শাকিব খানের কাছে চুক্তিভঙ্গের কারণে অর্থ (প্রায় দশ লক্ষ টাকা) ফেরত চাইছেন।যদিও শাকিব খান সেটা এখনও পরিশোধ করেননি।আমেরিকায় গিয়ে সেটা যদি পরিশোধ না করেন, তাহলে তারা আইনী ব্যবস্থাও নেবেন বলেও জানা গেছে।অন্যদিকে আরো কয়েকজনের কাছে বিমানের টিকেট চেয়েছেন বলেও জানান ঐ প্রযোজক। তিনি জানান, এস এ হক অলিক পরিচালিত ‘গলুই’ সিনেমাটি যখন আমেরিকায় মুক্তি দেয়া হয় ‘বায়োস্কোপ’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে, সেই প্রতিষ্ঠানের মালিকের কাছেও বিমানের টিকিট দাবী করেছেন শাকিব। শুধু তাই নয়, সিনেমাটির প্রিমিয়ারে অংশ নেবার মাত্র তিন ঘন্টা আগে শাকিব সেই প্রতিষ্ঠানের মালিকের কাছে দাবী করেন, তাকে দুই হাজার মার্কিন ডলার না দিলে প্রিমিয়ারে যাবেন না। এদিকে অনুষ্ঠানের সবকিছু প্রস্তুত করে নায়ক না গেলে সম্মান ধুলিস্মাৎ হয়ে যাবে, এই ভয়ে বায়োস্কোপের মালিক শাকিবের অন্যায় দাবী মেনে নিয়ে দুই হাজার ডলার দেন। এরপর শাকিব অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন। এদিকে শাকিবের পাঁচ সিনেমার ঘোষণা ছিলো ফাঁকা আওয়াজ। 


শাকিব খান দীর্ঘ ধরেই আমেরিকা যাওয়ার স্বপ্ন দেখে আসছিলেন।বেশ কয়েকবার আবেদন করেও প্রত্যাখ্যাত হয়েছিলেন এই নায়ক।তবে শেষ পর্যন্ত ‘চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ড’-এ অংশ নিতে আমেরিকায় যাওয়ার ভিসা পান তিনি।চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে স্বপ্নের দেশে উড়ালও দেন।যাওয়ার মাস খানেক পরেই জানা গেলো দেশটিতে স্থায়ীভাবে বসবাস করার জন্য গ্রীণ কার্ডের আবেদন করেছেন শাকিব খান।এরপর নিয়মানুযায়ী সর্বনিম্ন ছয় মাস সেখানে অবস্থান করা।এই অবস্থানকালীন শাকিব খান বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন।